আমি সজিব, ২০২০ সালে ব্লগিং শুরু করি এবং গুগল এডসেন্সের (Google Adsense) মাধ্যমে আমার অনলাইন আয়ের যাত্রা শুরু হয়। প্রথমদিকে আয় শুরু করতে অনেক সময় লেগেছিল, কিন্তু ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং সঠিক কৌশল অনুসরণ করে আজ আমি প্রতিমাসে গুগল এডসেন্স থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা আয় করছি।
এই কেস স্টাডিতে আমি আমার ব্লগিং যাত্রার শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত সমস্ত প্রক্রিয়া, গাইডলাইন এবং গুগল এডসেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত শেয়ার করবো। পূর্ণাঙ্গ ব্লগিং গাইড ও দিকনির্দেশনা আছে এই আর্টিকেলে। ব্লগিং কিভাবে শুরু করবেন- গুগল এডসেন্স গাইড
ব্লগিং শিখার যাত্রা শুরু (Start Blogging)
১. ব্লগিং শুরু করার পেছনের কারণ (why Blogging)
আমার ব্লগিং শুরু করার পেছনে মূল কারণ ছিল নিজের লেখার দক্ষতাকে ব্যবহার করে আয়ের একটি নতুন পথ তৈরি করা। ২০২০ সালে যখন লকডাউনের কারণে অনেকেই বাসায় বসে সময় কাটাচ্ছিল, তখন আমি অনলাইনে আয়ের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জানতে থাকি। ব্লগিং সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণা করার পর বুঝলাম, এটি একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র যা দীর্ঘমেয়াদে ভালো আয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারে।
২. প্রথম ব্লগ তৈরির ইতিহাস ( My First Blog)
আমার স্পষ্ট মনে আছে প্রথম যখন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করব তখন আমার কাছে কোন টাকাই ছিল না। তখন আমি আমার বড় বোনের কাছে পিকনিকের কথা বলে দুই হাজার টাকা নিয়ে সেটি দিয়ে আমার প্রথম ওয়েবসাইট তৈরি করি।
অবশ্য পরবর্তীতে সবকিছু আমি খুলে বলেছিলাম। কেননা প্রথমে যখন আমি বলতাম যে আমি অনলাইনে কোন একটি কাজ করার জন্য ২০০০ টাকা ইনভেস্ট করব সেটি হয়তো আমাকে পরিবার থেকে প্রোভাইড করত না।
কেননা অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা হয়ে থাকে, যদিও বুঝিয়ে বললে হয়তো দিতো তারপরও এত ঝামেলা নিতে চাইনি।
যাই হোক, প্রথম ব্লগ তৈরি করতে গিয়ে আমি কয়েকটি বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম:
- নিশ নির্বাচন (Niche Selection): এমন একটি নিশ নির্বাচন করা যা সম্পর্কে আমার আগ্রহ আছে এবং যার উপর গবেষণা করতে ভালো লাগে। আমি প্রযুক্তি ও ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করতে শুরু করি।
- ওয়েবসাইট প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন (Blogging Platforms): আমি ব্লগিংয়ের জন্য WordPress ব্যবহার শুরু করি, কারণ এটি ব্যবহার করা সহজ এবং বিভিন্ন প্লাগিনের মাধ্যমে এটি কাস্টমাইজ করা যায়। আপনারা যদি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে আমাদের এই ওয়েবসাইটে গাইডলাইন রয়েছে।
- সঠিক ডোমেইন ও হোস্টিং (Domain Hosting): ডোমেইন ও হোস্টিং নির্বাচনে কিছুটা সময় দিয়েছি। গুণগত মানের হোস্টিং না থাকলে ব্লগের লোডিং টাইম বেড়ে যেতে পারে, যা ইউজার এক্সপেরিয়েন্স খারাপ করতে পারে। এ বিষয়গুলি আমি ইউটিউব এবং বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল পড়ে জেনে নিয়েছিলাম।
আরও পড়ুন: অনলাইন ইনকাম এর খুটিনাটি- অনলাইনে আয়ের পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন
ব্লগিং গাইডলাইন- আমি যেভাবে নিজেকে ব্লগে নিয়েছি তো করেছিলাম
১. নিশ নির্বাচন কৌশল (neche selection)
একটি সফল ব্লগের জন্য সঠিক নিশ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিশ নির্বাচন করার সময় আমি তিনটি বিষয় মাথায় রেখেছি:
- আগ্রহ (interest): আমি এমন একটি নিশ নির্বাচন করেছি, যা সম্পর্কে আমি আগ্রহী এবং দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে পারবো।
- প্রতিযোগিতা (Competition): নিশে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি হলে সফল হওয়া কঠিন হতে পারে। তাই আমি এমন নিশ নির্বাচন করেছি যেখানে প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম ছিল।
- মনেটাইজেশন (Monetization): আমি এমন নিশ নির্বাচন করেছি যা গুগল এডসেন্সের (Google Adsense) মাধ্যমে সহজে মনেটাইজ করা যায়।
২. কনটেন্ট স্ট্রাটেজি (Content Stategy)
ওয়েবসাইট তৈরি করার পর প্রথমে যে চ্যালেঞ্জটা আছে সেটি হচ্ছে কন্টেন রাইটিং। কেননা কনটেন্ট হচ্ছে ব্লগের প্রাণ। ভালো কনটেন্ট ছাড়া আপনার ব্লগ কখনোই সফল হতে পারে না। আমি কয়েকটি বিষয়ের উপর ফোকাস করেছি:
- ইউজার ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট (User Friendly Content): আমি সবসময় চেষ্টা করেছি কনটেন্টকে এমনভাবে উপস্থাপন করতে, যাতে আমার পাঠকেরা সহজেই তা বুঝতে পারে।
- ইউনিক কনটেন্ট (Unique and High Quality Content): কপি পেস্ট করা কনটেন্ট কখনোই ভাল ফলাফল দেয় না। আমি নিজের ভাষায় নতুন ও ইউনিক কনটেন্ট তৈরি করেছি।
- নিয়মিত আপডেট (Regular Update): ব্লগ নিয়মিত আপডেট রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি প্রতি সপ্তাহে নতুন পোস্ট করার চেষ্টা করি এবং পুরানো পোস্টগুলোও আপডেট রাখি।
৩. এসইও (SEO) কৌশল (Search Engin Optimization)
ওয়েবসাইট তৈরি করার পর যখন কন্টেন্ট করা শুরু করলাম তখন দেখছি আমার ওয়েবসাইটে কোনরকম ভিসিটর আসছে না। তখনই আমি SEO তথা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করি। এসইও করার পর আমার ওয়েবসাইটে দিন দিন ভিজিটর বাড়তে থাকে
SEO এর ক্ষেত্রে আমি মূলত তিন ধরনের SEO এর উপর কাজ করেছি:
১। কীওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research)
এসইও কৌশলের মূল ভিত্তি হলো কীওয়ার্ড রিসার্চ। আমি কীওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য Google Keyword Planner এবং Ahrefs এর মতো টুলস ব্যবহার করি। কীওয়ার্ড নির্বাচন করার সময় আমি কিছু বিষয় বিবেচনা করেছি:
- লো কম্পিটিশন কীওয়ার্ড (Low Competion Keyword): শুরুতে এমন কীওয়ার্ড নির্বাচন করা উচিত যেগুলোর প্রতিযোগিতা কম।
- হাই ট্রাফিক কীওয়ার্ড (High Search Volium): উচ্চ সার্চ ভলিউম আছে এমন কীওয়ার্ড নির্বাচন করলে আপনার ব্লগে দ্রুত ট্রাফিক বাড়তে পারে।
২। অন-পেজ SEO: (On-page SEO)
কনটেন্টের মধ্যে সঠিকভাবে কীওয়ার্ড ব্যবহার, মেটা ট্যাগ তৈরি, ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল লিংকম, কি ওয়ার্ড পজিশন ঠিক রাখা, কিওয়ার্ড স্টাফিং, লং টেইল কিওয়ার্ড ব্যবহার করা, এলএসআই কিওয়ার্ড ব্যবহার করা এর বিষয়ে জেনে ভালোভাবে এপ্লই করা এবং ইমেজ অপ্টিমাইজেশন।
৩। অফ-পেজ SEO: (Off-page SEO)
ব্লগের বাইরে লিংক বিল্ডিং, গেস্ট পোস্টিং এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার ইত্যাদি। আমার ব্লগে অফ তেমন একটা করা হয়নি। যেহেতু আমার ওয়েবসাইটটি বাংলায় তৈরি তাই োটামুটি ভালো কনটেন্ট এর মাধ্যমে র্যাঙ্ক হয়ে গিয়েছিল।
৪। টেকনিকাল SEO: (technical SEO)
ওয়েবসাইটের গতি বৃদ্ধি, মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন এবং সাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করে সেটি এপ্লাই করি।
গুগল এডসেন্স গাইড (Google Adsense Guide)
ওয়েবসাইট তৈরি করার পর এই পর্যন্ত আসতে আমার প্রায় তিন মাস সময় লেগেছিল। এ অবস্থায় বর্তমানে আমার ওয়েবসাইটে প্রায় বৃষ্টি আর্টিকেল রয়েছে এবং মোটামুটি ভিজিটর আসা শুরু হয়েছে।
এখন আমাকে ইনকাম করার জন্য অগ্রসর হতে হবে তার জন্য আমি বেছে নিয়েছিলাম গুগল এডসেন্স।
১. গুগল এডসেন্সের জন্য আবেদন (Google Adsense Application)
যখন আমার ব্লগে কিছু কনটেন্ট আপলোড হয়ে গেল এবং কিছু ট্রাফিক আসা শুরু করলো, তখন আমি গুগল এডসেন্সের জন্য আবেদন করি। গুগল এডসেন্সে সফলভাবে আবেদন করার জন্য আমার কিছু পরামর্শ:
- কমপক্ষে ১০-১৫টি পোস্ট: গুগল এডসেন্স আবেদন করার পূর্বে আপনার ব্লগে কমপক্ষে ১০-১৫টি মানসম্মত পোস্ট থাকতে হবে।
- অরিজিনাল কনটেন্ট: আপনার সমস্ত কনটেন্ট অবশ্যই অরিজিনাল হতে হবে।
- স্প্যামিং না করা: ব্লগের কনটেন্টের মধ্যে কোন স্প্যামিং নেই তা নিশ্চিত করা।
- একটি সুন্দর ও পরিষ্কার ডিজাইন: ওয়েবসাইটের ডিজাইন গুগলের গাইডলাইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।
উপরের এই বিষয়গুলি খেয়াল করলে আশা করা যায় আপনার ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স নিশ্চিত এপ্রোভাল করবে।
২. মনেটাইজেশন কৌশল (Ad Placement)
গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে মনেটাইজ করতে হলে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়:
- সঠিক অ্যাড প্লেসমেন্ট: আপনার অ্যাডগুলি এমনভাবে স্থাপন করা উচিত যাতে তা ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের ক্ষতি না করে।
- অ্যাড ফরম্যাট: গুগল এডসেন্স বিভিন্ন ধরনের অ্যাড ফরম্যাট সরবরাহ করে। আমি সাধারণত ব্যানার অ্যাড এবং ইন-আর্টিকেল অ্যাড ব্যবহার করি। সাথে অটো এড ব্যবহার করেছি।
- অ্যাড ব্লকিং এড়িয়ে চলা: গুগল এডসেন্স থেকে আয় কমানোর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অ্যাড ব্লকার অন্যতম। তাই কনটেন্ট এমনভাবে তৈরি করা উচিত যাতে ইউজাররা অ্যাড ব্লক করতে আগ্রহী না হয়। এদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে
এডসেন্স থেকে আয় করতে কতদিন সময় লাগে
ব্লগিং থেকে আয় শুরু করতে সময় লাগে। আমি প্রথম তিন মাসে কোনো আয় পাইনি। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন আমার ব্লগে ট্রাফিক বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, তখন আমি এডসেন্সের মাধ্যমে আয় করা শুরু করি। তবে উল্লেখযোগ্য আয়ের জন্য আমার প্রায় এক বছর সময় লেগেছে। ব্লগিং থেকে আয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ভর করে কিছু বিষয়ের উপর:
১. কনটেন্টের পরিমাণ ও গুণগত মান (Content Quantity And Quality)
ব্লগের পোস্ট যত বেশি এবং গুণগত মান যত ভালো হবে, তত দ্রুত আপনার ব্লগে ট্রাফিক আসবে এবং আয় বাড়বে। আমি প্রতি সপ্তাহে নতুন পোস্ট দেয়ার লক্ষ্য রাখতাম, যা আমাকে গুগল এডসেন্সে দ্রুত এপ্রোভাল পেতে সাহায্য করেছে।
২. এসইও (SEO) কার্যক্রম (Search Engin Optimization)
যদি আপনি ভালোভাবে SEO কৌশল ব্যবহার করেন, তবে দ্রুত সার্চ ইঞ্জিন থেকে ট্রাফিক পেতে পারেন। তবে SEO থেকে ফলাফল আসতে কিছু সময় লাগে। আমি তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আমার SEO কৌশলের ফলাফল পেতে শুরু করি।
৩. নিশ ও টার্গেট অডিয়েন্স (Tergeted Adience)
যে নিশে আপনি কাজ করছেন এবং আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কোথা থেকে আসছে, সেটাও আয়ের সময়সীমার উপর প্রভাব ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, ইউএস বা ইউরোপের ট্রাফিক থেকে আয় তুলনামূলকভাবে দ্রুত আসে, কারণ এসব অঞ্চলে সিপিসি (Cost Per Click) অনেক বেশি।
৪. মনেটাইজেশন মাধ্যম (Monetization)
শুধু গুগল এডসেন্স নয়, ব্লগিং থেকে আয় বাড়াতে অন্যান্য মনেটাইজেশন কৌশলও ব্যবহার করা যেতে পারে। আমি গুগল এডসেন্সের পাশাপাশি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ও স্পন্সরশিপ নিয়েও কাজ করেছি, যা আমার আয়ের একটি ভালো অংশ তৈরি করেছে।
গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে কত টাকা ইনকাম করা যায়
গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে কত টাকা আয় করা যায় তা নির্ভর করে কিছু ফ্যাক্টরের উপর:
- ট্রাফিক (Site Visitor): যত বেশি ট্রাফিক, তত বেশি ইনকাম। বিশেষ করে ইউএস বা ইউরোপিয়ান ট্রাফিক থেকে সিপিসি (Cost Per Click) বেশি পাওয়া যায়।
- নিশ (Niche): বিভিন্ন নিশে সিপিসি ভিন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ, টেক নিশে সিপিসি তুলনামূলক বেশি।
- অ্যাড পজিশনিং (Ad Placement): অ্যাড সঠিকভাবে পজিশন করলে সিপিএম (Cost Per Mille) বেশি হয়।
আমি বর্তমানে প্রতিমাসে প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকা আয় করছি। আমার ট্রাফিকের বড় অংশ আসছে সার্চ ইঞ্জিন থেকে, এবং ভালো মানের নিশ নির্বাচন এবং কনটেন্ট স্ট্রাটেজি ব্যবহার করে আমি এই অবস্থানে আসতে পেরেছি।
কি কি চ্যালেঞ্জ ও সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি
ব্লগিং জার্নিতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। শুরুতে আয়ের লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন ছিল। কনটেন্ট তৈরি করা, SEO এর কাজ করা এবং গুগল এডসেন্সে এপ্রোভাল পাওয়া সবকিছুই সময়সাপেক্ষ ছিল। এছাড়াও ব্লগের উন্নত মান বজায় রাখা, ট্রাফিক বৃদ্ধি এবং নিয়মিত পোস্ট আপলোড করা নিয়েও সমস্যায় পড়েছি।
১. কনটেন্ট নিয়ে সমস্যা
অনেক সময় আমি কনটেন্ট আইডিয়ার সংকটে পড়েছি। একসময় পোস্টের পরিমাণ ও মান ঠিক রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এর থেকে উত্তরণের জন্য আমি কনটেন্ট ক্যালেন্ডার তৈরি করি এবং নিজের আগ্রহের বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কনটেন্ট লেখা শুরু করি।
২. ট্রাফিক বৃদ্ধি বা SEO সমস্যা
ব্লগে ট্রাফিক না আসলে গুগল এডসেন্স থেকে আয় করা অসম্ভব। ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য SEO এর উপর বেশি মনোযোগ দিতে হয়েছে। তবে ট্রাফিক বৃদ্ধি পেতে বেশ কিছু সময় লেগেছে, এবং ধৈর্য ধরে কাজ করতে হয়েছে।
৩. গুগল এডসেন্সের এপ্রোভাল পেতে দেরি হয়েছিল
গুগল এডসেন্সের এপ্রোভাল পেতে কিছু সময় লেগেছিল, কারণ আমার ব্লগে পর্যাপ্ত কনটেন্ট ছিল না এবং ব্লগের ডিজাইনও বেশ কিছু জটিলতা ছিল। পরে ব্লগের ডিজাইন সহজ ও ইউজার ফ্রেন্ডলি করার মাধ্যমে এডসেন্সে দ্রুত এপ্রোভাল পেয়েছি।
৪। প্রথম ব্যর্থতা ও শেখার আগ্রহ
প্রথমদিকে আমার ব্লগ থেকে কোনো উল্লেখযোগ্য ট্রাফিক বা আয়ের উৎস তৈরি হয়নি। তবে এই ব্যর্থতাই আমাকে বিভিন্ন নতুন কৌশল শেখার এবং সেগুলো বাস্তবায়ন করার সুযোগ করে দেয়। আমি কিভাবে হাই কোয়ালিটি কনটেন্ট তৈরি করতে পারি, সঠিক SEO কৌশল প্রয়োগ করতে পারি, এবং গুগল এডসেন্স থেকে বেশি আয় আয় করতে পারি এ নিয়ে আরও গভীরভাবে রিসার্স করা শুরু করি এবং নতুন অনেক কিছু শিখি।
নতুনদের জন্য আমার পরামর্শ
আমার ব্লগিং সফলতার পেছনে কয়েকটি মূল বিষয় কাজ করেছে, যা আপনার ব্লগিং যাত্রায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে:
১. ধারাবাহিকতা বজায় রাখা
ব্লগিং থেকে আয় করতে চাইলে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত পোস্ট করা এবং কনটেন্ট আপডেট রাখা ব্লগের উন্নতির জন্য অপরিহার্য।
২. ইউজার-ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট
আমি সবসময় চেষ্টা করেছি পাঠকদের জন্য প্রাসঙ্গিক এবং তথ্যবহুল কনটেন্ট তৈরি করতে। পাঠকদের প্রশ্ন ও সমস্যার সমাধান দিতে পারলে তারা আপনার ব্লগে বারবার ফিরে আসবে, যা ট্রাফিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
যেমন, সুন্দর উদাহরন, অল্প কথায় বুঝানো, ঘুরিয়ে পেচিয়ে আর্টিকের বড় না করার দিকে নজর দিয়েছি।
৩. কৌশলগত SEO ব্যবহার
SEO ছাড়া ব্লগে ট্রাফিক পাওয়া এবং আয়ের আশা করা কঠিন। SEO কৌশলগুলো ভালোভাবে ব্যবহার করলে দ্রুত সার্চ ইঞ্জিনে ভালো র্যাঙ্ক পাওয়া যায়। আমি কীওয়ার্ড রিসার্চ এবং লিঙ্ক বিল্ডিং এর মাধ্যমে আমার ব্লগের ট্রাফিক বৃদ্ধি করেছি।
এছাড়াও প্রথম দিকে ফেসবুক,কোরা, লিংকদিন ইত্যাদি ও কিছু গেস্ট পোস্ট এর মাধ্যমে ট্রাফিক জেনারেট করেছি।
৪. নিয়মিত কন্টেন্ট আপডেট
নিয়মিত কন্টেন্ট আপডেট করার মাধ্যমে ইউজারদেরকে ধরে রেখেছি। এখানে কিছু ট্রিক্স ব্যবহার করেছি যে এই আর্টিকেলটি প্রায়ই আপডেট হয় আপডেট গুলো দেখার অনুরোধ রইলো। তখন ইউজাররা মাঝেমাঝে আপডেট দেখার জন্য আমার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করত এবং সেখানে নতুন নতুন কিছু আপডেট পেতো।
আমার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক মোটামুটি পারতে শুরু করে এবং ইনকামও বাড়তে শুরু করে। আপনারা চাইলে এট্রিক্স টি ব্যবহার করতে পারেন এটি অত্যন্ত কার্যকরী একটা পদ্ধতি।
৫। নোটিফিকেশন সিস্টেম:
ওয়েব সাইটে আমি নোটিফিকেশন সিস্টেম চালু রেখেছিলাম। যদি কেউ আমার ওয়েবসাইটে সাবস্ক্রাইব করে রাখে পরবর্তীতে আমি যখন কোন পোস্ট আপডেট করি এবং নতুন কোন কন্টেন্ট পাবলিশ করি তখন তাদের কাছে একটি নোটিফিকেশন চলে যায়।
এতে করে আমার পুরাতন ইউজারগুলো পুনরায় আমার ওয়েবসাইটে আবার প্রবেশ করে।
সর্বপরি যা বলবো-
২০২০ সালে ব্লগিং শুরু করার পর থেকে আমার এই যাত্রা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল, কিন্তু ধৈর্য, পরিশ্রম, এবং সঠিক কৌশল ব্যবহার করে আমি সফলতা অর্জন করতে পেরেছি।
প্রতিমাসে ১.৫ লক্ষ টাকা আয় করার পথে অনেক বাধা পেরিয়েছি, তবে সময়ের সাথে সাথে আমি শিখেছি কীভাবে ব্লগিং থেকে সফলভাবে আয়ের সুযোগ তৈরি করা যায়।
যারা নতুন ব্লগিং শুরু করতে চান, তাদের জন্য আমার পরামর্শ হবে, শুরুতে ধৈর্য ধরে কাজ করুন, কনটেন্টের মান বজায় রাখুন এবং SEO কৌশলগুলোর উপর গুরুত্ব দিন। ব্লগিং থেকে আয় করতে সময় লাগতে পারে, কিন্তু ধৈর্য, নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি, এবং সঠিক ভাবে নিয়মিত আপডেট থাকলে ব্লগিং এ সফলতা অর্জন করা সম্ভব।