মাসে $1000 ইনকাম : ব্লগিং করে আয় করার- সম্পূর্ণ টিউটোরিয়াল

“ব্লগিং করে কি মাসে $1000 আয় সম্ভব?” এক কথায় উত্তর হলো: হ্যাঁ, সম্ভব! তবে ব্লগিং করে আয় করার জন্য সঠিক গাইড, ধৈর্য এবং একটুখানি ক্রিয়েটিভিটি কাজে লাগাতে হবে। এছাড়া সঠিক প্লান করে কাজ করতে হবে।

এই টিউটরিয়ালে আমি শেয়ার করবো কীভাবে আপনি Blogging করে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা ইনকাম করবেন।

এখানে প্রেকটিক্যাল উদাহরণ, টিপস ও সেকরেট ট্রিকস থাকবে। পুরাপুরি ধারনা পেতে অবশ্যই এই লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।

বিগত সালের একটি সার্ভে অনুযায়ী, ১৪% ব্লগার মাসে $1000+ আয় করেন। এটা কিন্তু হিউজ একটা এমাউন্ট।

আর টপ 1+ ডলার ইনকাম করেন এটা বাংলা টাকায় কত? তা হিসাব করে নিয়েন। (Source: HubSpot).

তবে এর পিছনের মেইন বিষয় হল:

  • কোয়ালিটি কন্টেন্ট
  • এসিও অপটিমাইজেশন
  • ও মনিটাইজেশন সেকরেট

এ প্রত্যেকটি বিষয়ের সেক্রেট গুলি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি।

এখানে আমি স্টেপ বাই স্টেপ মোট 7টি বিষয়ে উল্লেখ করব। এই সাতটি বিষয় ফলো করে কাজ করতে পারলে ইনশাআল্লাহ শতভাগ ফলাফল পাবেন।

মাসে $1000 ইনকাম : ব্লগিং করে আয় করার- সম্পূর্ণ টিউটোরিয়াল

মাসে $1000 ইনকাম : ব্লগিং করে আয় করার- সম্পূর্ণ টিউটোরিয়াল

ব্লগিং করে ইনকাম করার ৭টি সেক্রেট (স্টেপ বাই স্টেপ)

এ সাতটি বিষয়ে প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ এবং একটি অন্যটির সাথে সম্পৃক্ত। প্রত্যেকটি বিষয়ে মনোযোগ সহকারে বুঝে বুঝে পড়তে হবে। কিভাবে কাজ শুরু করবেন- সেটি উল্লেখ করা হয়েছে।

১। সঠিক নিশ/ টপিক ‍নির্বাচন।

প্রথমে একটি ফর্মুলা দিয়ে শুরু করছি : Passion + Profit = Perfect Niche

খুলাখুলি করে বলছি, টপিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রথমে প্রাধান্য দিতে হবে আপনার প্যাশন অর্থাৎ, আপনার কোন বিষয়টি সবচেয়ে ভালো লাগে।

যদি আপনার পছন্দের বিষয়টি নিয়ে ব্লগিং শুরু করতে পারেন, তাহলে সেটাই হবে আপনার জন্য পারফেক্ট নিশ বা টপিক।

আপনি যদি টেকনোলজি বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে ভালোবাসেন, বা কোন টেক গেজেট নিয়ে ভালো ধারণা থাকে, অথবা খেলাধুলা আপনার প্রিয় খুবই প্রিয়। তাহলে আপনি টেকনোলজি, গেজিট বা খেলাধুলা নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। কেননা এই বিষয়গুলি সম্পকে প্রচুর জ্ঞান আপনার আগে থেকেই আছে।

আপনি যদি রান্না করতে ভালবাসেন তাহলে রান্না বিষয়ে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। যেখানে নতুন নতুন রেসিপি বা রান্না বিষয়ক পরামর্শ দিয়ে অন্যদেরকে হেল্প করতে পারবেন। যেহেতু সেটি আপনার পছন্দের বিষয় সেক্ষেত্রে আপনি খুব সহজে অন্যদেরকে সহযোগিতা করতে পারবেন।

এখানে আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, আপনি যে বিষয়টি নিয়ে শুরু করতে চাচ্ছেন সেটি মার্কেটে চাহিদা আছে কিনা। যদি মার্কেটে চাহিদা থাকে তাহলে অনায়াসে শুরু করতে পারেন।

একটি রিয়েল লাইফ এক্সাম্পল হলো: আমি মূলত অনলাইনে ইনকাম বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের রিসার্চ করে থাকি। যেমন, কিভাবে অনলাইনে ইনকাম করা যায়, বা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন অথবা ব্লগিং করে কিভাবে অনলাইন থেকে ইনকাম করা  যায় এ বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা করতে আমার ভালো লাগে তাই আমি এই বিষয়ে ব্লগ তৈরী করেছি।

আরও কয়েকটি বিষয় জানতে হবে:

  • খুবই সতর্কতার সাথে নিশ/টপিক নির্বাচন করতে হবে। যে বিষয়গুলি তুলনামূলক বেশি লোকে খুঁজে, এবং ওই বিষয়গুলিতে ইন্টারনেটে কম সংখ্যক তথ্য আছে। তাহলে খুব দ্রুত আপনার আর্টিকেলটি জনপ্রিয় হবে।
  • বিভিন্ন টুলস এর মাধ্যমে যাচাই করতে হবে, আপনি যে বিষয়টিতে লিখবেন সেই বিষয়টিতে কি পরিমাণে কম্পিটিশন রয়েছে। আর ওই বিষয়টি মানুষের কতটা প্রয়োজন। (ব্লগ রিসার্চ এর জন্য অনলাইন টুলস ব্যবহার করতে পারেন).
  • এমন টপিক নির্বাচন করুন যেখানে আপনার আগ্রহ আছে এবং মার্কেট ডিমান্ড ভালো আছে।

রিয়েল-লাইফ উদাহরণ:
আমার এক স্টুডেন্ট, সে ট্রাভেল করতে ভালবাসে। তাই সে শুরুতে “ট্রাভেল গাইড” নিয়ে কাজ শুরু করেছিল।

তার  মূল টপিক ছিল– ”কম বাজেটে কিভাবে ট্রভেল করা যায়, কিভাবে বিদেশে স্টাডির জন্য যাবে, কম খরছে কিভাবে বিদেশ ভ্রমন করবে” ইত্যাদি। এ সম্পর্কে যে কিওয়ার্ড গুলি সার্চ ভলিউম বেশি ও কম্পিটিটর কম এমন কিওয়ার্ড খুজে আর্টিকেল লিখতো। এবং পাশাপাশি ওয়েবসাইট এ কিছু টেকনিক্যাল কাজ, ও এসইও করতো।  ৬ মাসের মধ্যে মাসে $800+ আয় শুরু হয় এবং বর্তমানে $2000+ ইনকাম করে।

মুল কথা ব্লগিং করে আয় করার জন্য সঠিক বিষয় নির্বাচনের পর যে বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো কন্টেন্ট।

২। কোয়ালিটি কন্টেন্ট ও  প্ল্যানিং :  (Quality Over Quantity)

কনটেন্ট লেখা সময় বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যে বিষয়গুলো বেশি ইম্পরট্যান্ট সেগুলি সংক্ষিপ্তভাবে আমি এখানে আলোচনা করছি। কোয়ালিটি কন্টেন্ট লেখার জন্য এখানে ৪টি বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

1। বাস্তব অভিজ্ঞতা:

আপনি যে বিষয়টি নিয়ে লিখবেন সে বিষয়টি সম্পর্কে পড়াশোনা করে ভালো জেনে নেবেন। তারপর সেই বিষয়ে কন্টাক্ট লেখা শুরু করবেন। আপনি যে বিষয়টি লিখবেন সে বিষয়টি সম্পর্কে অবশ্যই আপনার বাস্তব ধারণা থাকতে হবে।

2। পরিপূর্ণ দক্ষতা:

আপনি যে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি করছেন সে বিষয়ে আপনার কতটুকু দক্ষতা রয়েছে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যত বেশি দক্ষতা থাকবে সেই বিষয়টিতে তত বেশি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারবেন।

3। সঠিক বাস্তবতা:

আপনি যে বিষয়টি শিখাচ্ছেন সেই বিষয়টি অবশ্যই বাস্তবতা থাকতে হবে। অর্থাৎ আপনি যেভাবে বলছেন বাস্তবিক ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনি হতে হবে।

মনে করুন, আপনি শেখালেন ”কিভাবে পাস্তা রান্না করতে হয়”। যেভাবে দেখালেন বাস্তবিক অর্থে সেভাবে রান্না করা যায় না। তাহলে এখানে বস্তব বিষয়গুলি নেই। এমন লেখা পড়ে মানুষ উপকৃত হবে না।

4। বিস্বস্থতা/বিশ্বাসযোগ্যতা থাকতে হবে:

আপনি যে কনটেন্টি পাবলিশ করলেন সেই কনটেন্টটিতে অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্যতা হতে হবে।

ধরুন- আপনি একটি কন্টেন্ট লিখলেন “ডাটা এন্ট্রি করে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করার উপায়” আসলে সত্যিকার অর্থে ডাটা এন্ট্রি করে দৈনিক এই পরিমান টাকা ইনকাম করা সম্ভন নয়। এখানে কিন্তু আপনার কনটেন্টের বিশ্বাস যোগ্যতা  নেই।

এতক্ষন যে বিষয়গুলো বললাম এটি হচ্ছে একটি কন্টেন্টের মৌলিক বিষয়:

আপনার কনটেন্ট এর স্ট্রাকচার কেমন হওয়া উচিত তা সংক্ষেপে বলে দিচ্ছি।

  • প্রতিটি আর্টিকেল1,500+ শব্দের হওয়া উচিত ।
  • আর্টিকেলটি মেইন কিওয়ার্ড দিয়ে অপটিমাইজ করতে হবে।
  • হেডিং সাব হিডিং এবং বাস্তব উদাহরণ থাকা উচিৎ।
  • অবশ্যই আকর্ষণীয় ও সংক্ষেপে ম্যাটা ডেসক্রিপশন দিতে হবে।
  • LSI Keywords ব্যবহার করতে হবে।
  • কনটেন্টের প্রয়োজনীয় ইমেজ বা স্ক্রিনশট যুক্ত করতে হবে।
  • ইনফোগ্রাফিক্স, ভিডিও যুক্ত করতে পারলে ভালো।
  • কনটেন্ট এর সাথে মিল রেখে যদি কেস স্টাডি থাকে তাহলে উল্লেখ করতে পারেন।
  • কন্টেন্টের ভিতরে ইন্টারনেল এবং এক্সটার্নাল লিংকিং করতে হবে।
  • প্রয়োজনে ইউজার নোট, বা পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।

আরো কয়েকটি বিষয়ঃ আপনার আর্টিকেলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশন অন রাখতে হবে। প্রতিনিয়ত ইউজারদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। আপনার আর্টিকেলে প্রশ্ন উত্তর পর্ব রাখতে পারেন। সময়ের সাথে সাথে আপনার আর্টিকেলটিকে অবশ্যই আপডেট করতে হবে।

৩। SEO অপ্টিমাইজেশন: গুগলের প্রথম পেজে যাওয়ার ম্যাজিক

SEO ছাড়া ব্লগিংয়ে সাফল্য প্রায় অসম্ভব। একটি আর্টিকেল রেঙ্ক করানোর জন্য নিচের স্টেপগুলো ফলো করুন:

  • কি-ওয়ার্ড রিসার্চ: শর্ট কিওয়ার্ড ব্যবহার না করে সব সময় চেষ্টা করবেন লং-টেইল কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করার জন্য। (যেমন: “ব্লগিং করে মাসে ১০০০ ডলার আয়ের উপায়”)
  • On-Page SEO: টাইটেল, মেটা ডেস্ক্রিপশন, হেডিং, সাব হেডিং এবং ইমেজ ভালোভাবে অপ্টিমাইজ করতে হবে।
  • Off-Page SEO: হাই অথরিটি সাইটগুলোতে গেস্ট পোস্ট, বিভিন্ন ফোরাম প্রশ্ন উত্তর সাইট ও ওয়েবসাইট গুলো থেকে ব্যাক লিঙ্ক নিতে হবে।

অতঃপর যে বিষয়টি সেটি হল মনিটাইজেশন অর্থাৎ কিভাবে টাকা ইনকাম করবেন।

৪। মনিটাইজেশন: গুগল এডসেন্স ও অন্যান্ন

শুধু অ্যাডসেন্সে ভরসা না করে, একাধিক সোর্স থেকে আয় করুন: যেমন

  • গুগল অ্যাডসেন্স: প্রতি ক্লিকে $50 পর্যন্ত আয় গতে পারে। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার ওয়েবসাইট এর টপিক ও ইউজারের লোকেশন এর উপর। আরও পড়ুন: গুগল এডসেন্স থেকে আমি কিভাবে প্রতিমাসে ১.৫ লক্ষ টাকা ইনকাম করি
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: Amazon, Alibaba, বা ClickBank থেকে প্রোডাক্ট প্রমোট করুন। কমিশন ৫%-৫০% পর্যন্ত!
  • স্পন্সরড পোস্ট: ট্রাফিক 10k/month এ পৌঁছালে ব্র্যান্ডগুলো প্রতি পোস্টে 50−200 দেবে।
  • ডিজিটাল প্রোডাক্ট: ই-বুক, কোল্ড-স্টার্ট গাইড, বা অনলাইন কোর্স বিক্রি করুন।
  • কোর্স সেল করে ইনকাম: আপনি যদি কোন বিষয়ে দক্ষ হন তাহলে সেই বিষয়ে কোর্স তৈরি করে সেটি আপনার ব্লগের মাধ্যমে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন।

রিসার্চ ডেটা: Ahrefs এর মতে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ব্লগারদের গড়  আয় $1500/ প্রতি মাসে।

৫। ট্রাফিক/ ভিজিটর নিয়ে আসার উপায়: সোশ্যাল মিডিয়া + ইমেইল মার্কেটিং

ব্লগে ভিজিটর আনতে হলে আপনাকে যে বিষয়গুলি খেয়াল রাখতে হবে।

  • SEO: প্রথমে এসিওর দিকে ফোকাস করতে হবে এতে অর্গানিক ট্রাফিক/ভিজিটর আসে। অতঃপর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ভিজিট আনতে হবে। যেমন- প্রিন্টারেস্ট, ফেসবুক, ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদি।
  • Pinterest: আপনার কনটেন্ট এর ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসুয়াল কনটেন্ট তথা ইমেজ বানিয়ে সেটাপ ইন্টারেস্টে পোস্ট করতে পারেন। ইন্টারেস্ট থেকে বর্তমানে প্রচুর ভিজিটর আসে।
  • ফেসবুক গ্রুপ: আপনার টার্গেট অডিয়েন্স যেখানে আছে, সেই সকল ফেসবুক গ্রুপে আপনার ওয়েবসাইট এর পোস্ট ইমেজ বা লিংক শেয়ার করতে পারেন।
  • ইমেইল লিস্ট: আপনার ওয়েবসাইট এর ক্যাটাগরি অনুযায়ী ইমেইল লিস্ট কালেকশন করে সেখানে মার্কেটিং করতে পারেন।  ConvertKit বা Mailchimp ব্যবহার করে সাবস্ক্রাইবার সংগ্রহ করা যেতে পারে। প্রতি ইমেইল ক্যাম্পেইনে ৫%-১৫% কনভার্সন রেট পাওয়া যায়।

৬। ওয়েবসাইট ট্র্যাকিং ও  ডাটা আপলোড

Google Analytics এবং Search Console ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটের অবস্থান বুঝতে পারবেন। অবস্থান বুঝে আপনাকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। যে বিষয়গুলো খেয়াল করতে হবে তা হলো:

  • কোন পোস্টে সর্বাধিক ট্রাফিক আসছে
  • ইউজাররা কোন কী-ওয়ার্ডে ক্লিক করছে
  • কোন আর্টিকেল ইম্প্রেশন অনুযায়ী রাঙ্ক পিছনে
  • কোন আর্টিকেলগুলি ব্যাংকে থাকার পরও ক্লিক কম হচ্ছে
  • সার্চ কনসোলের সিটিআর কমে যাচ্ছে কেন
  • বাউন্স রেট কমানোর উপায় কী

যে পদক্ষেপ নিতে হবেঃ

  • যে কিওয়ার্ড গুলিতে রেঙ্ক পিছন দিকে রয়েছে সেই কন্টেন্ট গুলো নিয়মিত আপডেট করতে হবে।
  • যে আর্টিকেল গুলোর সিটিআর কম সেগুলোর টাইটেল এবং ম্যাটা ডিস্ক্রিপশন আরো আকর্ষণীয় করতে হবে।
  • ইউজার ধরে রাখার জন্য আর্টিকেলে বিভিন্ন ধরনের হুক ব্যবহার করতে হবে।
  • যে সমস্ত টপিকে বেশি ভিজিটর আসছে সে সম্পর্কে আরো নতুন আর্টিকেল দিতে হবে।

যেমন: আপনি দেখলেন “ফ্রিল্যান্সিং গাইড” পোস্টে ৮০% ট্রাফিক আসছে। তাহলে এই টপিকে আরও কন্টেন্ট তৈরি করুন।

৭। ধৈর্য এবং লেগে থাকা = ব্লগিং করে আয়

ব্লগিংয়ে সাফল্য রাতারাতি আসে না। Neil Patel এর মতে, ৬-১২ মাস সময় লাগে স্টেবল ইনকাম বিল্ড করতে।

এ পর্যায়ে এসে আপনাকে যে কাজগুলি কন্টিনিউ রাখতে হবে:

  • নিয়মিত নতুন কনটেন্ট পাবলিশ করতে হবে।
  • পুরাতন কনটেন্ট গুলি মডিফাই করতে হবে।
  • আপনার টপিকে ব্লগারদের সাথে নেটওয়ার্কিং করতে হবে।
  • গুগল আপডেট এবং এসইও অপটিমাইজেশন এর ব্যাপারে সবসময় আপডেট থাকতে হবে।
  • ওয়েবসাইটের অথরিটি বাড়ানোর জন্য কাজ করতে হবে।

সচরাচর  যে ভুলগুলো এড়িয়ে চলতে হবে?

  • এলোমেলো কন্টেন্ট: শুধু SEO-ফ্রেন্ডলি লিখলে হবে না, ইউজারের সমস্যার সমাধান করতে হবে। যে কন্টেন্ট ইউজার রা পছন্দ করবে সেটা গুগল ও পছন্দ করবে।
  • মনিটাইজেশনে তাড়াহুড়ো: মনিটাইজেশনের জন্য তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন নেই। যদি আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক না থাকে, তাহলে মনিটাইজেশন দিয়ে কি হবে? আপনার ওয়েবসাইটে যখন ৪০ থেকে ৫০টি আর্টিকেল থাকবে, এবং প্রতিদিন 200 থেকে 300 ভিজিটর আসবে, তখন এডসেন্সের জন্য আবেদন করুন।
  • সোশ্যাল মিডিয়া ইগনোর: শুধু গুগলের উপর নির্ভর না করে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ট্রাফিক বাড়ান।

বাস্তব গল্প: মাসে $1000+ আয়ের (ব্লগিং করে আয়)

আমি ২০২১ সালে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করি।  সেটিতে প্রথম অবস্থায় প্রতিদিন একটি করে আর্টিকেল প্রকাশ করতে থাকি। ৪০টি আর্টিকেল হওয়ার পর গুগল এডসেন্স এ আবেদন করি এবং এপ্রুভাল পাই। যখন আমার ওয়েবসাইটের বয়স ২ মাস তখন আমার ইনকাম হওয়া শুরু হয়।

তারপর থেকে আমি প্রতি সপ্তাহে দুইটি করে আর্টিকেল প্রকাশ করি। এবং মোটামুটি এসিও ব্যাক লিঙ্ক ও সোশ্যাল শেয়ার করতে থাকি। আমার ওয়েবসাইট এর বয়স যখন ৬ মাস তখন প্রথম পেমেন্ট ($159) রিসিভ করি।

তারপর থেকে প্রতি মাসে পেমেন্ট রিসিভ করতে থাকি। বর্তমানে ওই ওয়েবসাইট থেকে আমার মাসিক ইনকাম $1200- $2000 ডলার।

আর হ্যাঁ আমি এই ওয়েবসাইটটিতে শুধুমাত্র গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ইনকাম করি আর অন্য কোন ইনকামের মাধ্যমে ব্যবহার করিনি।

ব্লগিং সম্পর্কে সাধারণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

Q: ব্লগিং শুরু করতে কত টাকা লাগে?

A: ডোমেন এবং হোস্টিং কেনার জন্য বছরে 5 হাজার টাকার আশেপাশে খরচ হতে পারে। এছাড়া ব্লগিং শুরু করতে মূলত আর কোন টাকা লাগে না।

Q: ব্লগিং করে আয় করার উপায় কি?

A: ব্লগ থেকে গুগল এডসেন্স, এফিলিয়েট মার্কেটিং, স্পন্সর আর্টিকেল, ও অন্যান্য উপায়ে আয় করা যায়।

Q: ব্লগ থেকে কি ধরনের আয় হয়?

A: ব্লগ থেকে যে ইনকামটা হয় সেটি মূলত প্যাসিভ ইনকামের মধ্যে পড়ে। অর্থাৎ একবার ইনকাম শুরু হলে অনেকদিন পর্যন্ত এই ইনকামটা স্টেবল রয়ে যায়।

Q: ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়?

A: ব্লগিং করে মূলত প্রতি মাসে ১ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে শত কোটি টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব। তবে এর জন্য আপনার সঠিক প্লান করতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

Q: কিভাবে ব্লগিং শুরু করবো?

A: ব্লগিং শুরু করার জন্য প্রথমে আপনাকে মনস্থির করতে হবে। এবং প্লানিং করে কাজ শুরু করে দিতে হবে। এই লেখাটি পড়তে পারেন: কিভাবে ব্লগিং শুরু করবো (9টি স্টেপ)

Q: ব্লগিং শুরু করতে হলে কি ধরনের কাজ জানতে হবে?

A: ব্লগিং শুরু করার জন্য মূলত বেশি কিছু জানতে হবে না। কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক ধারণা এবং ইন্টারনেট সম্পর্কে বেসিক ধারণা থাকলেই আপনি ব্লগিং শুরু করতে পারবেন।

Q: ব্লগিং শুরু করার জন্য কি কি জিনিস লাগবে?

A: একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার, ইন্টারনেট কানেকশন অথবা ভালো মানের একটি মোবাইল ফোন থাকলেও আপনি প্রাথমিকভাবে শুরু করতে পারবেন। তবে পরবর্তীতে অবশ্যই আপনার কম্পিউটার দিয়ে কাজ করতে হবে।

সর্বপরি আমার পরামর্শঃ

ব্লগিং করে মাসে $1000 আয় করা কোনো জটিল বিষয় নয়। এটি একটি প্রসেস, যার জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, প্রবল ইচ্ছা, পজিটিভ মেন্টালিটি ও পরিশ্রম।

আপনি যদি ব্লগিং করে আয় শুরু করতে চান তাহলে, আজই মানসিক প্রস্তুতি নিন, আপনার নিশ সিলেক্ট করুন, একটি ব্লগ তৈরি করুন, এবং ভ্যালুয়েবল কন্টেন্ট দেয়া শুরু করুন।

মনে রাখবেন, প্রতিটি সফল ব্লগারের যাত্রা একদিন “প্রথম পোস্ট” দিয়ে শুরু হয়েছিল!

ব্লগিং সম্পর্কে যদি আরও জানতে চান তাহলে ঝটপট কমেন্ট করুন। যত দ্রুত সম্ভব উত্তর দেয়ার চেস্টা করবো। ইনশাআল্লাহ

Updated: February 23, 2025 — 12:57 pm

The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *